Ayatul kursi bangla – আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

Ayatul kursi bangla – আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

পবিত্র কুরআনে বিশেষ বিশেষ কিছু আয়াত ও সুরা রয়েছে, যা খুবই ফজিলতপূর্ণ। সেসব আয়াতের মধ্য থেকে ‘আয়াতুল কুরসি’ অন্যতম। আয়তুল কুরসিকে বলা হয় আল-কুরআনের শ্রেষ্ঠ আয়াত। এটি নিয়মিত আমল করলে শ্রেষ্ঠ নেয়ামত লাভ করা যায়। এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।

আয়াতুল কুরসি কী?

আয়াতুল কুরসি কুরআনুল কারিমের সবচেয়ে বড় সূরা ‘সূরা আল-বাক্বারার ২৫৫ নং আয়াত’। যা সমগ্র কুরআনের সবচেয়ে বড় আয়াতও বটে। এ সূরার রয়েছে অনেক ফজিলত। এর ফজিলত সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ওবাই ইবনে কা’বকে জিজ্ঞাস করলেন সবচেয়ে ফজিলত ও গুরুত্বপূর্ণ আয়াত কোনটি? ওবাই ইবনে কা’ব আরজ করলেন, সেটি হচ্ছে আয়াতুল কুরসি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা সমর্থন করলেন এবং বললেন, হে আবুল মানজার! তোমাকে এ উত্তম জ্ঞানের জন্য ধন্যবাদ। (মুসনাদে আহমদ)

হাদিসের ভাষায় আয়াতুল কুরসি পাঠের বিশেষ চার উদ্দেশ্য

১. হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে আয়াতুল কুরসি পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকে না। (নাসাঈ)

২. হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি নিয়মিত পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় থাকে। যে ব্যক্তি এ আয়াতটি শোয়ার আগে পড়বে আল্লাহ তার ঘর, প্রতিবেশীর ঘর এবং আশপাশের সব ঘরে শান্তি বজায় রাখবেন। (বায়হাকি)

৩. হজরত উবাই বিন কাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উবাই বিন কাবকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমার কাছে কুরআন মাজিদের কোন আয়াতটি সর্বশ্রেষ্ঠ? তিনি বলেছিলেন, (আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহু আল্ হাইয়্যুল কাইয়্যুম) তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ হাত তার বুকে রেখে বলেন, আবুল মুনযির! এই ইলমের কারণে তোমাকে ধন্যবাদ। (মুসলিম)

৪. আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সুরা বাকারার মধ্যে এমন একটি আয়াত রয়েছে, যে আয়াতটি পুরো কোরআনের নেতাস্বরূপ। তা পড়ে ঘরে প্রবেশ করলে শয়তান বের হয়ে যায়। তা হলো ‘আয়াতুল কুরসি’। (মুসনাদে হাকিম)

Ayatul kursi bangla – আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

আয়াতুল কুরসি আরবি

আয়াতুল কুরসীর ফযিলত ও মাহাত্ম্য অনেক উচ্চ পর্যাযের। সম্মন এবং মর্যাদার বিবেচনায় কুরআন মজীদের আয়াতসমূহের মধ্যে এটি সর্বমহান, এবং সুউচ্চ আয়াত।

হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াতটিকে সর্বোত্তম বলেছেন। প্রতিদিন অন্তত একবার আয়াতুল কুরসি পাঠ করে সওয়াব অর্জন করি।

اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইউল কাইয়ুম। লা তা খুজুহু সিনাতুউ ওয়ালা নাউম। লাহু মাফিস সামা ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদি। মান জাল্লাজি ইয়াসফায়ূ ইনদাহু ইল্লা বি ইজনিহি। ইয়ালামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম ওয়ালা ইয়ুহিতুনা বিশাইয়িম মিন ইলমিহি ইল্লা বিমাশায়া ওয়াসিয়া কুরসীয়ু হুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি। ওয়ালা ইয়া হুদ্দুহু হিফজুহুমা ওয়া হুয়াল আলিউল আজীম।

-(আল বাকারার ঃ ২৫৫)

আয়াতুল কুরসি অর্থ

আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।

Ayatul kursi bangla – আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

আয়াতুল কুরসির ফজিলত

আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আল্লাহর রাসূল বলেছেন: “যে ব্যক্তি প্রতি ফরয নামায শেষে আয়াতুল কুরসী পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া কোন কিছু বাধা হবে না। (সহীহ আল্‌ জামে :৬৪৬৪) হজরত আলী (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসি নিয়মিত পড়ে, তার জান্নাত প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় হয়ে আছে। যে ব্যক্তি এ আয়াতটি বিছানায় শয়নের সময় পড়বে আল্লাহ তার ঘরে, প্রতিবেশীর ঘরে এবং আশপাশের সব ঘরে শান্তি বজায় রাখবেন। (সুনানে বাইহাকী )

যে ব্যক্তি উক্ত আয়াত রাতে পাঠ করবে আল্লাহর পক্ষ থেকে তার সাথে একজন রক্ষণা বেক্ষণকারী ফেরেশতা নিযুক্ত থাকবেন এবং সকাল র্পযন্ত শয়তান তার কাছে আসতে পারেনা কারণ, শয়তান ওয়াদা করেছে যে, যে ব্যাক্তি আয়াতুল কুরছি পড়বে আমি তার কাছে যাব না।

শুক্রবার আছরের নামাযের পর নির্জন স্থানে বসে এই আয়াত ৭ বার পাঠ করলে মনে এক আশ্চর্যভাবের উদয় হয় এ ঔ সময় পাঠকারীর দোয়া কবুল হয়।

হযরত আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত :রাসুল (সা.) বলেছেন:সুরা বাকারায় একটি শ্রেষ্ঠ আয়াত রয়েছে, যে ঘরে আয়াতুল কুরসী পাঠ করা হবে সেখান থেকে শয়তান পালাতে থাকে। (মুসতাদরাকে হাকিম:২১০৩)

আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রমজান মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে যাকাতের সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব দিলেন। দেখলাম, কোন এক আগন্তুক এসে খাদ্যের মধ্যে হাত দিয়ে কিছু নিতে যাচ্ছে। আমি তাকে ধরে ফেললাম। আর বললাম, আল্লাহর কসম! আমি অবশ্যই তোমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে নিয়ে যাবো। সে বলল, আমি খূব দরিদ্র মানুষ। আমার পরিবার আছে। আমার অভাব মারাত্নক। আবু হুরাইরা বলেন, আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকাল বেলা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসলাম, তখন তিনি বললেন, কী আবু হুরাইরা! গত রাতের আসামীর খবর কি? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে তার প্রচন্ড অভাবের কথা আমার কাছে বলেছে। আমি তার উপর দয়া করে তাকে ছেড়ে দিয়েছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, অবশ্য সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে। দেখবে সে আবার আসবে।

হাদীসে এসেছে –

আমি এ কথায় বুঝে নিলাম সে আবার আসবেই। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সে আবার আসবে। আমি অপেক্ষায় থাকলাম। সে পরের রাতে আবার এসে খাবারের মধ্যে হাত দিয়ে খুঁজতে লাগল। আমি তাকে ধরে ফেললাম। আর বললাম, আল্লাহর কসম আমি অবশ্যই তোমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে নিয়ে যাবো। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দাও। আমি খুব অসহায়। আমার পরিবার আছে। আমি আর আসবো না। আমি এবারও তার উপর দয়া করে তাকে ছেড়ে দিলাম। সকাল বেলা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসলাম, তিনি বললেন, কী আবু হুরাইরা! গত রাতে তোমার আসামী কী করেছে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে তার চরম অভাবের কথা আমার কাছে বলেছে। তার পরিবার আছে। আমি তার উপর দয়া করে তাকে ছেড়ে দিয়েছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, অবশ্য সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে। দেখো, সে আবার আসবে।

তৃতীয় দিন আমি অপেক্ষায় থাকলাম, সে আবার এসে খাবারের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে খুঁজতে লাগল। আমি তাকে ধরে ফেললাম। আর বললাম, আল্লাহর কসম আমি অবশ্যই তোমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে নিয়ে যাবো। তুমি তিন বারের শেষ বার এসেছ। বলেছ, আসবে না। আবার এসেছ। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দাও। আমি তোমাকে কিছু বাক্য শিক্ষা দেবো যা তোমার খুব উপকারে আসবে। আমি বললাম কী সে বাক্যগুলো? সে বলল, যখন তুমি নিদ্রা যাবে তখন আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাকে একজন রক্ষক পাহাড়া দেবে আর সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না।

আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকাল বেলা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসলাম, তখন তিনি বললেন, কী আবু হুরাইরা! গত রাতে তোমার আসামী কী করেছে? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে আমাকে কিছু উপকারী বাক্য শিক্ষা দিয়েছে, তাই আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তোমাকে সে কী শিক্ষা দিয়েছে? আমি বললাম, সে বলেছে, যখন তুমি নিদ্রা যাবে, তখন আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাকে একজন রক্ষক পাহাড়া দেবে আর সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না।

আর সাহাবায়ে কেরাম এ সকল শিক্ষণীয় বিষয়ে খুব আগ্রহী ছিলেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে তোমাকে সত্য বলেছে যদিও সে মিথ্যাবাদী। হে আবু হুরাইরা! গত তিন রাত যার সাথে কথা বলেছো তুমি কি জানো সে কে?

আবু হুরাইরা বলল, না, আমি জানি না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে হল শয়তান।

(বর্ণনায় : বুখারী)

এ হাদীস থেকে আমরা যা শিখতে পেলাম তা হল:

(১) জনগণের সম্পদ পাহাড়া দেয়া ও তা রক্ষা করার জন্য আমানতদার দায়িত্বশীল নিয়োগ দেয়া কর্তব্য। আবু হুরাইরা রা. ছিলেন একজন বিশ্বস্ত আমানতদার সাহাবী।

(২) আবু হুরাইরা রা. দায়িত্ব পালনে একাগ্রতা ও আন্তরিকতার প্রমাণ দিলেন। তিনি রাতেও না ঘুমিয়ে যাকাতের সম্পদ পাহাড়া দিয়েছেন।

(৩) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এটি একটি মুজেযা যে, তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকেও আবু হুরাইরার কাছে বর্ণনা শুনেই বুঝতে পেরেছেন শয়তানের আগমনের বিষয়টি।

(৪) দরিদ্র অসহায় পরিবারের বোঝা বাহকদের প্রতি সাহাবায়ে কেরামের দয়া ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দয়াকে স্বীকৃতি দিলেন। তিনি আবু হুরাইরা রা. কে বললেন না, তাকে কেন ছেড়ে দিলে? কেন দয়া দেখালে?

(৫) সাহাবায়ে কেরামের কাছে ইলম বা বিদ্যার মূল্য কতখানি ছিল যে, অপরাধী শয়তান যখন তাকে কিছু শিখাতে চাইল তখন তা শিখে নিলেন ও তার মূল্যায়নে তাকে ছেড়েও দিলেন।

(৬) খারাপ বা অসৎ মানুষ ও জিন শয়তান যদি ভাল কোন কিছু শিক্ষা দেয় তা শিখতে কোন দোষ নেই। তবে কথা হল তার ষড়যন্ত্র ও অপকারিতা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে তোমাকে সত্য বলেছে, তবে সে মিথ্যুক। এ বিষয়টিকে শিক্ষার একটি মূলনীতি হিসাবে গ্রহণ করা যায়।

(৭) জিন শয়তান মানুষের খাদ্য-খাবারে হাত দেয়। তা থেকে গ্রহণ করে ও নষ্ট করে।

(৮)আয়াতুল কুরসী একটি মস্তবড় সুরক্ষা। যারা আমল করতে পারে তাদের উচিত এ আমলটি ত্যাগ না করা। রাতে নিদ্রার পূর্বে এটি পাঠ করলে পাঠকারী সকল প্রকার অনিষ্টতা থেকে মুক্ত থাকবে ও জিন শয়তান কোন কিছু তার উপর চড়াও হতে পারবে না।

Ayatul kursi bangla – আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

আয়াতুল কুরসি – মহান আয়াত

আবু জর জুনদুব ইবনে জানাদাহ (রা.) নবী (সা.) জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রাসূল (সা.) বলেছিলেন, আয়াতুল কুরসী।

(নাসায়ি) উবাই বিন কাব থেকে বর্ণিত:নবী (সা.) উবাই বিন কা‘বকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন: “ তোমার কাছে কুরআন মজীদের কোন আয়াতটি সর্ব মহান? তিনি বলেছিলেন: (আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুআল্‌ হাইয়্যূল কাইয়্যূম) তারপর রাসূলুল্লাহ্ নিজ হাত দ্বারা তার বক্ষে আঘাত করে বলেন: আবুল মুনযির! এই ইলমের কারণে তোমাকে ধন্যবাদ”। – সহীহ মুসলিম ১৭৫৫

ফেরেশতা নিযুক্তকারী আয়াতঃ

আবু হুরায়রা (রাঃ) একদিন দেখতে পেলেন একজন আগন্তুক সদকার মাল চুরি করতেছে তখন তিনি আগন্তুকের হাত ধরে বললেন, “আল্লাহর কসম ,আমি তোমাকে আল্লাহর রাসূলের কাছে নিয়ে যাব ”।তখন আগন্তুক বলে যে সে খুব অভাবী আর তার অনেক প্রয়োজন ।তাই দয়া করে আবু হুরায়রা (রাঃ) তাকে ছেড়ে দিলেন ।

পরদিন সকালে রাসূল (সাঃ) এর কাছে আসার পর তিনি আবু হুরায়রা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন “গতকাল তোমার অপরাধী কি করছে ?” আবু হুরায়রা (রাঃ)তখন তাকে ক্ষমা করার কথা বললেন । রাসূল (সাঃ) বললেন , “অবশ্যি সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে আর সে আবার আসবে ।” পরদিন আবু হুরায়রা (রাঃ) চোরের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন আর যখন সে আবার ও চুরি করতে আসল তখন তিন তাকে পাকড়াঁও করলেন আর বললেন “এবার অবশ্যই ,আমি তোমাকে আল্লাহর রাসূলের কাছে নিয়ে যাব ।” এবার ও সেই চোর বলে যে সে খুব অভাবী আর তার অনেক প্রয়োজন আর শপথ করে যে আর আসবে না ।পরদিন আবার ও রাসূলের তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি একই জবাব দেন আর তখন তিনি বলেন, “ আসলেই সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে আর সে আবার আসবে ।”

পরদিন ও আবার আবু হুরায়রা (রাঃ) চোরের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন আর যখন সে আবার ও চুরি করতে আসল তখন তিন তাকে পাকড়াঁও করলেন আর বললেন “এবার অবশ্যই ,আমি তোমাকে আল্লাহর রাসূলের কাছে নিয়ে যাব ।তুমি বার বার শপথ কর আর চুরি করতে আসে ।” চোর যখন দেখল এবার সে সত্যিই রাসূল (সাঃ) এর কাছে নিয়ে যাবে তখন অবস্থা বেগতিক দেখে সে বলে , “আমাকে মাফ কর ।আমি তোমাকে এমন কিছু বলে দিব যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাকে কল্যাণ দান করবেন ।”

আবু হুরায়রা (রাঃ) সেটা জানতে চাইলে চোর বলে ; “যখন ঘুমাতে যাবে তখন আয়াতুল কুরসী (আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল……) পড়ে ঘুমাবে তাহলে আল্লাহ তোমার জন্য একজন পাহাড়াদার নিযুক্ত করবে যে তোমার সাথে থাকবে আর কোন শয়তান সকাল পর্যন্ত তার কাছে আসতে পারবে না ।” এটা শুনে আবু হুরায়রা (রাঃ) তাকে ছেড়ে দিলেন ।

পরদিন রাসূল (সাঃ) আবার অপরাধীর কথা জানতে চাইলে তিনি আগের রাতের কথা বললেন ।তখন রাসূল (সাঃ) বললেন ; “ যদিও সে চরম মিথ্যাবাদী কিন্তু সে সত্য বলেছে ।” রাসূল (সাঃ) আবু হুরায়রা (রাঃ) কে বললেন ;“তুমি কি জান সে কে ?” আবু হুরায়রা (রাঃ) বললেন ; “ না ।” রাসূল (সাঃ) আবু হুরায়রা (রাঃ) কে বললেন , “সে হচ্ছে শয়তান ।” [সহীহ বুখারী নং ২৩১১]

Ayatul kursi bangla – আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

যিকিরের আয়াত

উবাই ইবনে কা‘ব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তাঁর এক খেজুর রাখার থলি ছিল। সেটায় ক্রমশ তার খেজুর কমতে থাকত। একরাতে সে পাহারা দেয়। হঠাৎ যুবকের মত এক জন্তু দেখা গেলে, তিনি তাকে সালাম দেন। সে সালামের উত্তর দেয় । তিনি বলেন: তুমি কি ? জিন না মানুষ? সে বলে: জিন। উবাই (রাঃ) তার হাত দেখতে চান। সে তার হাত দেয়। তার হাত ছিল কুকুরের হাতের মত আর চুল ছিল কুকুরের চুলের মত। তিনি বলেন: এটা জিনের সুরত। সে (জন্তু) বলে: জিন সম্প্রদায়ের মধ্যে আমি সবচেয়ে সাহসী। তিনি বলেন: তোমার আসার কারণ কি? সে বলে: আমরা শুনেছি আপনি সাদকা পছন্দ করেন, তাই কিছু সাদকার খাদ্যসামগ্রী নিতে এসেছি। সাহাবী বলেন: তোমাদের থেকে পরিত্রাণের উপায় কি? সে বলে: সূরা বাকারার এই আয়াতটি (আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহ হুআল হাইয়্যূল কাইয়্যূম), যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় এটি পড়বে, সকাল পর্যন্ত আমাদের থেকে পরিত্রাণ পাবে। আর যে ব্যক্তি সকালে এটি পড়বে, সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের থেকে নিরাপদে থাকবে। সকাল হলে তিনি রাসূলুল্লাহ্‌র কাছে আসেন এবং ঘটনার খবর দেন। রাসূলুল্লাহ্ বলেন: খবীস সত্য বলেছে” ( সহীহুত্‌ তারগীব:১/৪১৮)

উবাই বিন কাব থেকে বর্ণিত:নবী কারীম (সাঃ) বলেছেন: আল্লাহর কসম!যার হাতে আমার প্রাণ আয়াতুল কুরসীর একটি জিহবা ও দুটি ঠোট রয়েছে এটি আরশের পায়ার কাছে আল্লাহর প্রশংসা করতে থাকে। মুসনাদে আহমদ: ২১৬০২

Ayatul kursi bangla – আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

আয়াতুল কুরসী হাদীসের বর্ণনায়

আয়াতুল কুরসী নামে খ্যাত আয়াত কুরআন মজিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রেষ্ঠ আয়াত, এটার ফজিলত বরকত ও মর্যাদা অপরিসীম। এ আয়াতে মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন স্বীয় অস্তিত্ব, তাওহীদ ও অন্যান্য গুণাবলীর বর্ণনা বিশেষভাবে ব্যক্ত করেছেন। সকাল-বিকাল আয়াতুল কুরসির তেলাওয়াতে রয়েছে মুমিন বান্দার জন্য অনেক সুফল। ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলায়হি স্বীয় তারিখ গ্রন্থে আনস ইবনে মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন- নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন আরশ আযিমের নিম্নস্থান থেকে আয়াতুল কুরসী আমাকে দান করা হয়েছে। তফসীরে কবির ও তফসীরে নঈমীতে উল্লেখ আছে হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামা এরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামাযের পর আয়াতুল কুরসী তিলাওয়াত করবে তার এবং বেহেশতের মাঝখানে মৃত্যু ব্যতীত আর কোন বাঁধা থাকবে না। মৃত্যুর সাথে সাথে বেহেশতে প্রবেশের অধিকার উক্ত ব্যক্তি অর্জন করবে। আর সদা এ আয়াত তিলাওয়াতকারী সিদ্দিক ও আবিদ বান্দাগণের দলভুক্ত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করবে। তফসীরে দুররে মনসুর-এ উল্লেখ আছে আয়াতুল কুরসী তিলাওয়াতকারীর উপর একজন ফেরেশতা নিযুক্ত হয়। সে ফেরেশতা দ্বিতীয় দিন তিলাওয়াতের সময় আসা পর্যন্ত তেলাওয়াতকারীর আমলনামায় নেকী লিপিবদ্ধ করেন এবং আমলনামা থেকে গুণাহ্ মোচন করতে থাকেন। তফসীরে কবির ও তফসীরে নঈমীতে উল্লেখ আছে, যে ব্যক্তি ঘুমানোর আগে এ আয়াত তেলাওয়াত করবে তার ও তার প্রতিবেশীর ঘর বাড়ি চোর ডাকাত ও আগুণ থেকে সকাল পর্যন্ত নিরাপদে থাকবে। যে ঘরে আয়াতুল কুরসী পাঠ করা হয় সে ঘর থেকে শয়তান একমাস পর্যন্ত এবং যাদুকর চল্লিশ দিন পর্যন্ত দূরে সরে পড়ে।

যে লোক সকাল সন্ধ্যায় নিজের ছেলে মেয়েদের উপর আয়াতুল কুরসী পড়ে ফুঁক দেবে এর বরকতে তারা শয়তান, যাদু ও বদ নযর থেকে নিরাপদে থাকবে। একজন সাহাবী নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে এসে আরজ করলেন এয়া রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে কোন কিছুতে বরকত নেই, তদুত্তরে নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামা এরশাদ করলেন আয়াতুল কুরসী পাঠ করতে থাক। এর দ্বারা বুঝা গেল আয়াতুল কুরসী পাঠে বরকত নাযিল হয়। যে ব্যক্তি সফরে রওয়ানা হওয়ার আগে ঘরে আয়াতুল কুরসী পাঠ করে ফুঁক দিয়ে বের হবে, সফর থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত তার সম্পদ ও পরিবার পরিজন নিরাপদে থাকবে।

Ayatul kursi bangla – আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

আয়াতুল কুরসী শয়তানের অনিষ্ঠ থেকে নিরাপদ

জীন শয়তান থেকে বাচার শরিয়ত সম্মত উপায়- (অবশ্যই পড়ুন কেননা মানুষের প্রধান শত্রুই এই জিন-সয়তান)

এখানে কয়েকটা বিষয় রয়েছে, প্রথমে জানা দরকার জিনে ধরা রোগীর আচরণ কেমন হয়, দ্বিতীয়ত কি কাজ করলে জীন শয়তান দূরে থাকে, তৃতীয়ত বাচ্চাদেরকে কি করে এদের থেকে হেফাজত করা যায় এবং শেষেরটা হল কাউকে যদি জীন শয়তান আছর করেই ফেলে তবে তার সমাধান কি।

জিনে ধরা রোগীর কিছু বৈশিষ্ট্য

১- জিনে ধরা রোগী কিছুক্ষণের জন্য বেহুশ হয়ে যায়।

২- কখনো কখনো জিনে ধরা রোগীর মুখ থেকে ফেনা বের হয়।

৩- জিনে ধরা রোগী প্রায়ই সপ্নে সাপ, কুকুর, শিয়াল, বানর, ইঁদুর এগুলো দেখে।

৪- জিনে ধরা রোগী প্রায়ই ভিতু থাকে।

৫- জিনে ধরা রোগী নামাজ পড়া, কুরআন তিলায়াত, আল্লাহ্‌র জিকির পছন্দ করে না, ইত্যাদি।(শায়খ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমানের বই থেকে সংগৃহীত)

যে আমল করলে জীন শয়তান ভয়ে পালিয়ে যায়

১- রাসুল (সাঃ) বলেন, যে বেক্তি সকালে ১বার ও বিকালে ১বার আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, শয়তান থেকে সারাদিন সে আল্লাহ্‌র আশ্রয়ে থাকবে। (সহিহ তারগিব)

২- “রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি সকাল ও বিকালে সূরা ইখলাস, ‘সূরা ফালাক’ ও ‘সূরা নাস’ তিনবার করে বলবে, এটাই তার সবকিছুর জন্য যথেষ্ট হবে। (আবূ দাউদ; তিরমিযী)

৩- রাসুল (সাঃ) বলেন, যে বেক্তি সকালে ৩বার ও সন্ধ্যায় ৩বার নিম্নোক্ত দুয়াটি বলবে, তাহলে কোন কিছু তার ক্ষতি করতে পারবে না। (সহিহ আবুদাউদ)

«بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلاَ فِي السّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ».

(বিস্‌মিল্লা-হিল্লাযী লা ইয়াদ্বুররু মা‘আ ইস্‌মিহী শাইউন ফিল্ আরদ্বি ওয়ালা ফিস্ সামা-ই, ওয়াহুয়াস্ সামী‘উল ‘আলীম)।

“আল্লাহ্‌র নামে; যাঁর নামের সাথে আসমান ও যমীনে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। আর তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।”

৪- “রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : পেশাব পায়খানার স্থানে জিন শয়তান থাকে। অতএব তোমাদের কেহ যখন এখানে আসে সে যেন বলে,

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَالْخَبائِث».

আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযু বিকা মিনাল খুব্‌সি ওয়াল খাবা-ইস

হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট অপবিত্র পুরুষ জিন্ ও নারী জিন্ থেকে আশ্রয় চাই”। (ইবনে হিব্বান, বুখারী, মুসলিম)

এছাড়াও “রাসূলুল্লাহ (সাঃ) গর্তে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন কারণ গর্ত হল জিনদের থাকার জায়গা”। (সহীহ্-আবু দাউদ)

৫- “রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : “যখন তোমাদের কেউ ঘরে প্রবেশ করে, আর প্রবেশের সময় ও খাবারের সময় আল্লাহকে স্মরণ করে, তখন শয়তান (নিজ ব্যক্তিদের) বলে, তোমাদের কোনো বাসস্থান নেই, তোমাদের রাতের কোনো খাবার নেই।” (মুসলিম)

অর্থাৎ খাওয়ার সময় ও ঘরে প্রবেশের সময় বলতে হবে-

«بِسْمِ اللَّهِ»

(বিসমিল্লাহ) “আল্লাহর নামে।”

৬- রাসুল (সাঃ) বলেন : যে ব্যক্তি শোয়ার সময় আয়াতুল কুরসী পড়বে শয়তান সারা রাত তার নিকটে যাবে না।(বুখারী)

৭- রাসুল (সাঃ) বলেন : যখন তোমাদের কেউ হাই তোলে তখন সে যেন তার মুখে হাত দিয়ে বাধা দেয়। কারণ হাই তোলার সময় শয়তান প্রবেশ করে”।(মুসলিম)

Ayatul kursi bangla – আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

আয়াতুল কুরসী ও নবীজীর জীবন-যাপন

সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ট নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। দুনিয়াতে যারা তাঁর দেখানো পথে চলবে, পরকালে তারাই জান্নাতে যাবে। তারাই জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে। আমরা তাঁর উম্মত বা অনুসারী দল। আমরা তাঁর দেখানো পথে চলি। সঠিক পথ পাবার জন্যে তিনি আমাদের কাছে দুটি জিনিস রেখে গেছেন। একটি হলো আল্লাহর কুরআন। আর অপরটি হলো তাঁর সুন্নত বা সুন্নাহ।

নবীর সুন্নাহ সম্পর্কে জানা যায় হাদীস থেকে। হাদীসের অনেকগুলো বড় বড় গ্রন্থ আছে । নবীর বাণীকে হাদীস বলে।

নবীর কাজ কর্ম এবং চরিত্রের বর্ণনাকে ও হাদীস বলে। নবীর সমর্থন এবং আদেশ নিষেধের বর্ণনাকেও হাদীস বলে। ইসলামের সত্য ও সঠিক পথকে জানাবার জন্যে আমাদেরকে আল্লাহর বাণী কুরআন মজীদকে বুঝতে হবে এবং মানতে হবে।

ঠিক তেমনি আমাদেরকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী হাদীস পড়তে হবে এবং সে অনুযায়ী চলতে হবে। তবেই মহান আল্লাহ খুশী হবেন আমাদের প্রতি। আমরা হতে পারবো সত্যিকার মুসলিম।

আমাদের প্রথমেই জানতে হবে, আয়াতুল কুরসি কিন্তু কোরআনে কারিমের একটি আয়াত। একটি আয়াত, দুটি আয়াত না। কোরআনে কারিমের মধ্যে এটি ছাড়া আরো ছয় হাজার দুইশত পঁয়ত্রিশটি আয়াত রয়েছে।কোনো ধরনের প্রভাব থেকে ঘরকে মুক্ত রাখতে চান, তাহলে কোরআনে কারিমের এই আয়াতটি তিলাওয়াত করবেন।

রাসূল (সা.) হাদিসের মধ্যে কোরআনে কারিমের সূরা আল- বাকারা তিলাওয়াত করতে বলেছেন। আয়াতুল কুরসি বেশি বেশি করে তিলাওয়াত করবেন এবং সেই তিলাওয়াতটুকু হবে আওয়াজ করে। যদি নিরাপত্তার জন্য এবং কোনো ধরনের প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে চান, তাহলে এই আয়াতগুলো আওয়াজ করে তিলাওয়াত করবেন। কোরআন তিলাওয়াত করে ফায়দা নিতে হবে।

‍ আরো পড়ুন

Comments

Popular posts from this blog

মাখরাজ কাকে বলে - মাখরাজ শব্দের অর্থ কি - makhraj bangla

রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া বাংলা